এক সপ্তাহে ২ বিলিয়ন টন বরফ হারালো গ্রিনল্যান্ড

   |    ১২:০১ পিএম, ২০১৯-০৬-১৭


এক সপ্তাহে ২ বিলিয়ন টন বরফ হারালো গ্রিনল্যান্ড

জলবায়ু পরিবর্তন সারা পৃথিবীর অন্যতম চিন্তার বিষয়। জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় প্রথম দিকে রয়েছে বাংলাদেশ। শুধু বাংলাদেশ নয়, উন্নত দেশগুলোও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কতোটা ক্ষতিগ্রস্ত তা আমরা কম-বেশি জানি। সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে যে জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্র প্রভাব পড়েছে গ্রিনল্যান্ডে।

নামে গ্রিনল্যান্ড হলেও বাস্তবে উত্তর গোলার্ধের এই বিশাল দ্বীপটি ছিলো পুরু স্তরের বরফে ঢাকা- তথা ‘হোয়াইটল্যান্ড’। বৈরী আবহাওয়ার কারণে গত ১৩ জুন গ্রিনল্যান্ডের ৪০ শতাংশের বেশি জায়গায় বরফ গলার দৃশ্য দেখা গেছে। গত সপ্তাহেই ২ বিলিয়ন টন বরফ হারিয়েছে ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত দ্বীপ গ্রিনল্যান্ড।

মার্কিন সংবাদমাধ্যমটি সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে গতকাল (১৫ জুন) বলা হয়, সাধারণত জুলাই মাসে ব্যাপক হারে বরফ গলার দৃশ্য দেখা যায় গ্রিনল্যান্ডে। কিন্তু, এ বছর জুন মাসের মাঝামাঝিতেই দেখা গেলো এমন দৃশ্য- যা অস্বাভাবিক।

গ্রিনল্যান্ডের আবহাওয়া নিয়ে গবেষণা করছেন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী টমাস মোটে। তার মতে, হঠাৎ করে বিপুল পরিমাণ বরফ গলার ঘটনাটি “অস্বাভাবিক, কিন্তু, অভূতপূর্ব নয়।”

সংবাদমাধ্যমটিকে তিনি বলেন, “২০১২ সালের জুনে বরফ গলার যে ঘটনাটি ঘটেছিলো তার সঙ্গে এর তুলনা করা যায়।” সে বছর যে রেকর্ড পরিমাণ বরফ গলেছিলো তার প্রতিই ইঙ্গিত দিলেন বিজ্ঞানী মোটে।

সেই অঞ্চলে গ্রীষ্মের শুরুতেই এতো বিপুল পরিমাণের বরফ গলার ঘটনাটিকে খারাপ লক্ষণ হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে এ বছর বরফ হারানোর ক্ষেত্রে নতুন এক রেকর্ড সৃষ্টি হতে যাচ্ছে গ্রিনল্যান্ডের ইতিহাসে।

কেনো ঘটছে এমন ঘটনা?

বিজ্ঞানী মোটের মতে, আবহাওয়ার এই অবস্থার কারণেই গ্রিনল্যান্ডে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। “গ্রিনল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলে বরফের একটি বড় চাঁই ছিলো। গত বসন্তে সেই চাঁইটি পূর্ব গ্রিনল্যান্ডে এসে থেমে যায়। সেসময়ই দেখা যায় বরফের সেই চাঁইটি গলতে শুরু করছে। সেই অবস্থা এখনো অব্যাহত রয়েছে।”

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, মধ্য আটলান্টিক মহাসাগরে আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে গ্রিনল্যান্ডের আবহাওয়া উষ্ণ হয়ে গেছে। সে কারণেই দ্রুত গলছে বরফের চাঁইগুলো।

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণপূর্ব অঞ্চলে দীর্ঘদিন থেকে চলা গরম ও শুষ্ক মৌসুমের প্রভাবও পড়েছে গ্রিনল্যান্ডের আবহাওয়ায়। মোটে জানান, “আসলে ২০০৭ সাল থেকেই বিপুল পরিমাণে বরফ গলার দৃশ্য আমরা দেখতে পাচ্ছি। তখন এমন অভূতপূর্ব ঘটনার রেকর্ড করা হয়। অথচ ১৯৯০ এর দশকে এমন দৃশ্য দেখা যায়নি।”

গত দুই দশক থেকে গ্রিনল্যান্ডের এই অস্বাভাবিক বরফ গলা সারাবিশ্বে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখছে বলেও মন্তব্য করেন এই বিজ্ঞানী।

আর এই বরফ গলায় আরো বেশি ঝুঁকির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশসহ সমুদ্র উপকূলীয় ও দ্বীপ দেশগুলো।

 

সূত্র: ডেইলি ষ্টার